রাঙামাটি প্রতিনিধি: বেইন ঘর উদ্বোধন ও চরকায় সুতা কাটার মধ্য দিয়ে রাঙামাটির রাজবন বিহারে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ৪৮তম কঠিন চীবর দানোৎসব। পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত রাজবন বিহারের চীবর দানোৎসবের সাঙ্গ হবে আগামীকাল শুক্রবার দুপুরে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের চীবর উৎসর্গের মধ্য দিয়ে।
নিজস্ব প্রতিনিধি। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজবন বিহারে ফিতা কেটে বেইন ঘর উদ্বোধন করেন রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা কার্যনির্বাহী পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ান। চরকায় সুতা কাটা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত ও নারী উদ্যোক্তা মঞ্জুলিকা খীসা। এসময় রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা কার্যনির্বাহী পরিষদের নেতৃবৃন্দ ও দায়ক-দায়িকা উপস্থিত ছিলেন।
বেইন ঘর উদ্বোধনের পর সারারাত তুলা থেকে সুতা তৈরি, সুতা সিদ্ধ করার পর লাঙানো, রঙ করা এবং শুকানো শেষে চীবর বুনবেন দায়ক-দায়িকারা। আগামীকাল ভোর ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলবে চীবর বুননের কাজ। দুপুরে ভিক্ষু সংঘকে সেই চীবর (বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় বস্ত্র) দান করা হবে।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বিশ^াস, বৌদ্ধদের যত ধরণের দান রয়েছে তারমধ্যে সবচেয়ে পূণ্যের দান হলো কঠিন চীবর দান। এজন্য কঠিন চীবর দানোৎসবকে দানোত্তম চীবর দান উৎসব বলা হয়ে থাকে। এবছর রাজবন বিহারে প্রায় দুইশ’ বেইন ও দেড় শতাধিক চরকার সাহায্যে ৬ শতাধিক দায়ক-দায়িকা চীবর বুনার কাজে অংশগ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে বিহার কর্তৃপক্ষ।
পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে রাঙামাটির রাজবন বিহারে সবচেয়ে জমকালো আয়োজনে চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। পাহাড়ে কঠিন চীবর দানোৎসব শুরু হওয়ার পর একেবারে শেষদিকেই রাজবন বিহারে চীবর দানোৎসব হয়। তবে বিভিন্ন বিহারে এরপরও চীবর দানোৎসব হয়ে থাকে। রাজবন বিহারের চীবর দানে তিন পার্বত্য জেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থানরত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা অংশ নেন। তাই এটিকে বলা হয় দেশের সবচেয়ে বড় চীবর দানোৎসব।